অক্টোবর থেকে থাইল্যান্ড টিকাপ্রাপ্ত ভ্রমণকারীদের জন্য কোয়ারেন্টিন সাতদিনে কমিয়ে আনবে বলে সোমবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কারণ তাঁরা দেশটির ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে চাচ্ছেন।
মহামারীর আগে থাইল্যান্ডে বছরে প্রায় ৪০ মিলিয়ন দর্শনার্থীদের ভ্রমন করতো, কিন্তু কোভিড-সম্পর্কিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাগুলি এই খাতটিকে প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা ২০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে অর্থনীতিতে সবচেয়ে খারাপ অবদান রেখেছে।
ডেল্টা ভেরিয়েন্টের কারনে করোনা সংক্রমণের মারাত্মক তৃতীয় তরঙ্গের কবলে থাকা সত্ত্বেও রাজ্য পুনরায় চালু করার জন্য জোর দিচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে শুক্রবার থেকে সম্পূর্ণ টিকা নেওয়া দর্শনার্থীদের জন্য কোয়ারেন্টিনের সময়সীমা হবে ৭ দিন, যা বর্তমান ১৪ দিনের সময়কাল থেকে অর্ধেক হবে-যদি তাদের টিকা নেওয়ার সার্টিফিকেট থাকে।
সার্টিফিকেট ছাড়া দর্শনার্থীরা বিমানে করে এলে ১০ দিন এবং স্থল পথে আসলে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
সবারই কমপক্ষে দুটি নেগেটিভ কোভিড টেস্ট রিপোর্টের প্রয়োজন হবে।
সরকারের ডেপুটি মুখপাত্র রচাদা ধনাদিরেক ভ্যাকসিন বিহীন ভ্রমণকারীদের রাজ্যে প্রবেশ করা নিয়ে উদ্বেগ প্রত্যাহার করেছেন।
তিনি বলেন, “আমি মনে করি কেউ সংক্রমিত কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য এই ব্যবস্থাগুলি যথেষ্ট কার্যকর।”
এই শিথিলতা থাইল্যান্ডের সবচেয়ে জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকত দ্বীপ ফুকেটের “স্যান্ডবক্স” স্কিমের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, যা পর্যটন পুনরায় চালু করার প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে জুলাই মাসে চালু হয়েছিল।
এই স্কিম টিকাপ্রাপ্ত পর্যটকদের হোটেলে কোন কঠোর কোয়ারেন্টিন ছাড়াই প্রবেশের অনুমতি দেয় এবং দ্বীপে ১৪-দিন কাটানোর পর তিনটি নেগেটিভ কোভিড টেস্ট করিয়ে এরপর থাইল্যান্ডের অন্য যেকোনো স্থানে ভ্রমণ করা যায়।
১ নভেম্বর থেকে থাইল্যান্ড ব্যাংকক এবং আরও নয়টি অঞ্চলে টিকাপ্রাপ্তদের আগমনের পর বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনের প্রয়োজনীয়তা মওকুফ করবে। ডিসেম্বরে আরও ২০ টি অঞ্চলে তা কার্যকর করা হবে বলে কর্তৃপক্ষ সোমবার জানিয়েছে, যেহেতু দেশটি তার টিকাদান হার বাড়াতে এবং তার ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন খাতকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে।
অঞ্চলগুলির মধ্যে রয়েছে জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা চিয়াং মাই, ফাঙ্গা, ক্রাবি, হুয়া হিন, পাতায়া এবং চা-আম, যেগুলো জুলাই থেকে পাইলট স্কিমের আওতায় টিকাপ্রাপ্তদের জন্য ফুকেট এবং সামুই দ্বীপপুঞ্জের মতই সফলভাবে পুনরায় চালু করা হবে।
থাইল্যান্ডের সমস্ত পরিকল্পনার উপর যে কালো মেঘ ঝুলছে তা হলো অন্যান্য দেশে পর্যটকদেরকে ভ্রমণ থেকে নিরুৎসাহি পরামর্শ।
থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সংক্রমনের সংখ্যা এবং কম টিকা দেওয়ার কারণে ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ পরামর্শ জারি করেছে।
দেশটিতে এখনও প্রতিদিন ১০,০০০ এরও বেশি নতুন সংক্রমণের রেকর্ড হচ্ছে, সোমবার এর মোট সংখ্যার পরিমাণ ১.৫৭ মিলিয়নেরও বেশি এবং মৃত্যুর সংখ্যা ১৬,৩০০ তে পৌঁছেছে।