স্মার্টফোনে ভালো ছবি কিভাবে তুলবেন


 আমাদের জীবনের প্রতিটি কাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাড়িয়েছে, স্মার্টফোন। ঘর, কাজ, খেলা, ফের ঘর — সবখানেই এর সরব উপস্থিতি। প্রায়ই দেখা যায়, কোনো কোনো ল্যাপটপের তুলনায় তাদের হার্ডড্রাইভে জায়গা থাকে বেশি, প্রসেসরও হয় শক্তিশালী। মাঝে মাঝে মনে হয়, উঁচু ভবন থেকে লাফ দেয়া ছাড়া বাকি সব কাজই স্মার্টফোন করতে পারে।

অ্যাপের বাজারে এখন বছরে প্রায় ৮০০০ কোটি ডলারের বেচাকেনা হয়। ৬০ লাখ অ্যাপের মধ্যে থেকে সাংবাদিকরা তাদের কাজের ধরন বুঝে অনেক রকম টুল ডাউনলোড করে নিতে পারেন। অবশ্য মোবাইল সাংবাদিক বা মোজোরা মাথা ঘামান বেশি, ক্যামেরা অ্যাপ নিয়ে। এখন ফিল্মিক প্রো, বিস্টক্যাম, ও ক্যামেরা+ -এর মতো অ্যাপ দিয়ে স্মার্টফোনের আটপৌরে ক্যামেরাকেও বদলে ফেলা যায় ডিজিটাল সিঙ্গেল লেন্স রিফ্লেক্স ক্যামেরা, বা ডিএসএলআর-এ। পুরোপুরি না হলেও, অনেকটা তো বটেই।

এধরনের ক্যামেরা অ্যাপ নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে। এবার আসুন নজর দিই, সাধারণ আইফোন ক্যামেরার বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলোর দিকে। অ্যাডভান্সড কোনো অ্যাপ নিয়ে কাজ করার আগে এই ফিচারগুলো ভালোভাবে শিখে নেওয়া জরুরি।

ভিডিও করা শেখার জন্য আমি মোজো প্রশিক্ষক হইনি। আগে আমার কাজই ছিল ভিডিও স্টোরিটেলিং। প্রযোজনা, পরিচালনা, লেখা, হাজারো প্রতিবেদন ও প্রাইমটাইম অনুষ্ঠানের জন্য চিত্রধারণ – সবই আমি করেছি। তাই আমার কাজের ধরণ একেবারেই প্রায়োগিক, এবং পরীক্ষিত। 

মোজো প্রশিক্ষণ নিতে আসা অনেকে প্রায়ই আমাকে জিজ্ঞাসা করেন: “আমি কি ফিল্মিক অ্যাপ কিনব?” আমার সহজ উত্তর হলো: “আপনার কি এটি দরকার আছে?” প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই, এই প্রশ্নের উত্তর তাদের জানা থাকে না। আমি আবার জিজ্ঞেস করি: “আপনি কি জানেন, স্মার্টফোনের ক্যামেরা অ্যাপে গিয়ে ছবি তোলার বাটনটি কিছুক্ষণ চেপে ধরে রেখে আপনি ভিডিও রেকর্ড শুরু করতে পারেন?” 

আমার পরামর্শ: স্মার্টফোনের সঙ্গে থাকা ক্যামেরা অ্যাপে যে ফিচারগুলো আছে, সেগুলো সম্পর্কে আগে ভালোমতো জানুন। এরপর যদি আপনার আরো বেশি ফিচার প্রয়োজন হয়, তখনই কেবল অ্যাডভান্সড অ্যাপ কিনুন।

জিআইজেএন-এ আগের একটি লেখায় আমি আলোচনা করেছিলাম: কিভাবে বুঝবেন, আপনার নতুন ফোন লাগবে কিনা। এই লেখায় আমি ধরে নিচ্ছি: আপনি নিজের স্মার্টফোন নিয়ে মোটামুটি সন্তুষ্ট। আমি এখানে, আইফোন ১২ প্রো ম্যাক্স ধরে সব ফিচারগুলো আলোচনা করব। এর সব ফিচারই আইওএস ১৪-তে (আইফোনের এই অপারেটিং সিস্টেম চালু হয়েছে গত বছর) চলা আগের মডেলগুলোতে আছে। অ্যান্ড্রয়েডসহ অন্যান্য আরো অনেক প্ল্যাটফর্মেও ফিচারগুলো পাওয়া যায়।

সেটিংসের ক্যামেরা কন্ট্রোল

ছবি তোলা বা ভিডিও ধারণের আগে বুঝে নিন, ক্যামেরায় কোন কোন অপশন আছে। এজন্য প্রথমে যান “সেটিংসে”, তারপর “ক্যামেরায়”। এখানে আপনি বিভিন্ন অপশন দেখতে পাবেন। আমি অল্প কয়েকটির কথা উল্লেখ করছি: 

ফরম্যাট: মডেলভেদে আপনি দুই বা তিন ধরনের সেটিংস দেখতে পাবেন। “হাই এফিসিয়েন্সি” (এইচইআইভি/এইচভিইসি) অপশনটি আপনার ছবি বা ভিডিওর ফাইল সাইজ কমাবে। “মোস্ট কমপ্যাটিবল” (জেপিইজি/এইচ২৬৪)
অপশনে ফাইলের আকার বড় হয়। ProRAW (প্রো-র) ফাইলগুলো ১০ বিটের। এর সঙ্গে পরবর্তীতে নাটকীয় সব ইফেক্ট যোগ করা যায় (এই অপশনটি শুধু আইফোন ১২ প্রো ও ম্যাক্স-এ পাওয়া যায়)। জেপিইজি ফাইলগুলো ফোনের কম্পিউটেশনাল ক্ষমতা ব্যবহার করে অনেক বেশি পরিস্কার ছবি তৈরি করতে পারে। ProRAW ফাইলের ছবি এতোটা শার্প বা ঝা-চকচকে হবে না, যদি না পরে আপনি তাদের ওপর কাজ করেন। হোয়াইট ব্যালান্স ও হাইলাইটসের ওপর আরো ভালো নিয়ন্ত্রণ পাবেন ProRAW অপশনে। শ্যাডো ও স্কিন টোন নিয়েও পাবেন আরো বেশি ডায়নামিক রেঞ্জ। তবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের জন্য প্রশ্ন হলো: আপনার কি ছবিগুলো এত সম্পাদনার প্রয়োজন বা সময় আছে?

রেকর্ড ভিডিও: রেকর্ডিং ফ্রেম রেট ও রেজোল্যুশন বাছাই করুন। রেজোল্যুশন যত বেশি হবে, ভিডিও-র সার্বিক মানও তত ভালো হবে। কিন্তু এতে আপনার বেশি স্টোরেজ প্রয়োজন হবে। সাধারণত, ১০৮০পি “হাই ডেফিনেশন” অপশন সিলেক্ট করে ভিডিও ধারণ করলে ভালোমানের ভিডিও পাওয়া যায়। এছাড়াও ৭২০পি ও ফোর কে রেজোল্যুশনে ভিডিও ধারণের অপশন আছে। ফোনে যদি ছবি-ভিডিও রাখার জায়গার স্বল্পতা থাকে, তাহলে অল্প রেজোল্যুশনের অপশন বেছে নিন। অ্যাপলের “স্পেস সেভার” অপশন বাছাই করলে ১ মিনিটের ৭২০পি রেজোল্যুশনের ছবির আকার হয় ৪০ এমবি। ফোর-কে রেজোল্যুশন বাছাই করলে তার আকার দাঁড়ায় ১৭০ এমবি। ৩০ এফপিএস (ফ্রেম পার সেকেন্ড)-কে অনলাইনের জন্য আদর্শ ধরা হয় (এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রচারমাধ্যমেও এই ফ্রেম রেটই ব্যবহৃত হয়)। ২৪ এফপিএস থেকে আপনি আরো বেশি ফিল্মি চেহারা পাবেন। কিছু অ্যাপের মাধ্যমে ২৫ এফপিএস-এর অপশনও পাওয়া যায়। এই ফ্রেম রেট ব্যবহৃত হয় ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়ার টেলিভিশন সম্প্রচারে। আমার পরামর্শ হলো: যদি খুব প্রয়োজন না হয় তাহলে ২৪ বা ২৫এফপিএস অপশনে ভিডিও করবেন না। 

রেকর্ড ভিডিও: রেকর্ডিং ফ্রেম রেট ও রেজোল্যুশন বাছাই করুন। রেজোল্যুশন যত বেশি হবে, ভিডিও-র সার্বিক মানও তত ভালো হবে। কিন্তু এতে আপনার বেশি স্টোরেজ প্রয়োজন হবে। সাধারণত, ১০৮০পি “হাই ডেফিনেশন” অপশন সিলেক্ট করে ভিডিও ধারণ করলে ভালোমানের ভিডিও পাওয়া যায়। এছাড়াও ৭২০পি ও ফোর কে রেজোল্যুশনে ভিডিও ধারণের অপশন আছে। ফোনে যদি ছবি-ভিডিও রাখার জায়গার স্বল্পতা থাকে, তাহলে অল্প রেজোল্যুশনের অপশন বেছে নিন। অ্যাপলের “স্পেস সেভার” অপশন বাছাই করলে ১ মিনিটের ৭২০পি রেজোল্যুশনের ছবির আকার হয় ৪০ এমবি। ফোর-কে রেজোল্যুশন বাছাই করলে তার আকার দাঁড়ায় ১৭০ এমবি। ৩০ এফপিএস (ফ্রেম পার সেকেন্ড)-কে অনলাইনের জন্য আদর্শ ধরা হয় (এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রচারমাধ্যমেও এই ফ্রেম রেটই ব্যবহৃত হয়)। ২৪ এফপিএস থেকে আপনি আরো বেশি ফিল্মি চেহারা পাবেন। কিছু অ্যাপের মাধ্যমে ২৫ এফপিএস-এর অপশনও পাওয়া যায়। এই ফ্রেম রেট ব্যবহৃত হয় ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়ার টেলিভিশন সম্প্রচারে। আমার পরামর্শ হলো: যদি খুব প্রয়োজন না হয় তাহলে ২৪ বা ২৫এফপিএস অপশনে ভিডিও করবেন না। 

স্লো মোশনে রেকর্ড: আইফোনের বর্তমান মডেলগুলো স্লো মোশন ভিডিও রেকর্ড করতে পারে ১২০ বা ২৪০ এফপিএস-এ। (শুনতে উল্টো মনে হতে পারে, কিন্তু স্লো মোশনে ভিডিও দেখতে চাইলে আপনাকে সেটি রেকর্ড করতে হবে দ্রুতগতিতে।)

স্টেরিও সাউন্ড রেকর্ড: যে ডিভাইস, বিচ্ছিন্ন বা একাধিক ট্র্যাকে শব্দকে রেকর্ড করতে পারে না, তার জন্য কি আপনার স্টেরিও সুবিধা দরকার আছে? আপনি সম্পাদনার সময় অনায়াসে আরেকটি মনো (একক) ট্র্যাক যোগ করে নিয়ে, শব্দকে “ডুয়াল মনো” বানিয়ে ফেলতে পারেন, যা শুনতে স্টেরিওর মতোই লাগবে।

আমার পরামর্শ: যদি দুইটি ইন্টারভিউ সোর্স অথবা মূল ট্র্যাক ও আবহ (ব্যাকগ্রাউন্ড) শব্দকে মিক্সিং ও এডিটিং করতে হয়, তাহলে আলাদা রেকর্ডার ব্যবহার করাই ভালো। যেমন: জুম এইচ-ওয়ান। এভাবে আপনি আলাদা ট্র্যাকে শব্দ পাবেন।

স্ক্রিনের ক্যামেরা কন্ট্রোল আইকন



ফ্ল্যাশ: ম্যানুয়াল বা অটো সেন্সিং অপশনের মাধ্যমে ফ্ল্যাশ চালু করতে পারেন।

এইচডিআর: এর অর্থ: “হাই ডাইনামিক রেঞ্জ”। ডিপ শ্যাডো বা খুবই উজ্জ্বল হাইলাইটসের ক্ষেত্রে ভালো ছবি তোলার জন্য এই অপশনটি ব্যবহৃত হয়। এইচডিআর মোডে, ক্যামেরা দিয়ে তিনভাবে ছবি তোলা যায়:

  • সাধারণ এক্সপোজারে তোলা (গড়পড়তা আলো) ছবি
  • ওভার-এক্সপোজড (বেশি আলোতে তোলা) ছবি যেখানে ছায়ার ডিটেইল পাওয়া যায়।
  • আন্ডার-একপোজড (কম আলোতে তোলা) ছবি, যা উজ্জলতা, অর্থ্যাৎ সাদার প্রভাব কমিয়ে ডিটেইলকে আরো ফুটিয়ে তুলে। 

শেষ যে ছবিটি পাবেন, তা হবে এই তিনের সমন্বয়। এইচডিআর মোড নিজের ইচ্ছেমতো চালু বা বন্ধ করে নিতে, অথবা স্বয়ংক্রিয় মোডে রেখে দিতে পারেন, যেখানে শ্যাডো ও হাইলাইটস বুঝে নিয়ে অ্যাপ নিজে থেকেই মোডটি চালু করবে। ম্যানুয়াল মোডে, এইচডিআর অপশন দেখা যায় স্ক্রিনের বামপাশে ওপরের দিকে। 

টাইমার: এই অপশনের মাধ্যমে আপনি সময় নির্দিষ্ট (৩ বা ১০ সেকেন্ড) করে দিয়ে সেলফি তোলার সুযোগ পাবেন। 

ফ্রেম ওরিয়েন্টেশন মোড

ছবি: একটি বা পরপর বেশ কয়েকটি ছবি তোলার ক্ষেত্রে পোর্ট্রেট বা ল্যান্ডস্কেপ, যেকোনো ওরিয়েন্টেশন ব্যবহার করতে পারেন। ছবিটি হতে পারে স্থির কোনো জিনিসের, হতে পারে চলমান কিছুরও। ফটো মোডে ক্যামেরা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ফোকাস ঠিক করে নেয়। অথবা হলুদ বর্গটি এদিক-সেদিক সরিয়ে আপনি নিজে নিজেও ফোকাস ঠিক করে নিতে পারেন। কুইক টেক অপশনের মাধ্যমে সাদা শাটার বাটনটি চেপে ধরে থাকলে ভিডিও গ্রহণ শুরু হয়ে যায়। “স্কোয়ার” (বর্গাকার) মোডে আপনি একদম নিঁখুত বর্গাকৃতির ছবি তুলতে পারবেন, যেগুলো ইন্সটাগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবহারের ক্ষেত্রে কাজে লাগে। নতুনতর মডেলের ফোনে বাঁ পাশের তীরচিহ্নে ক্লিক করে, ফ্রেমিং মেনু অপশনে যেতে পারবেন।


পোর্ট্রেট: এটি একটি ডেপথ-অব-ফিল্ড ইফেক্ট তৈরি করে, যার মাধ্যমে একটি শার্প বস্তুর ছবি তোলার পর, আপনি তার অ্যাপারচার বা f stop পরিবর্তন করতে পারবেন। এভাবে সাবজেক্টের পেছনের ব্যাকগ্রাউন্ড, ঘোলাটে বা স্পষ্ট করে তোলা যায়। ছবিটি তোলা হয়ে যাওয়ার পরও কাজটি করতে পারবেন। এ জন্য পোর্ট্রেট মোডে ছবি তোলার পর ক্যামেরা রোল থেকে ছবিটি বাছাই করে “এডিট”-এ ক্লিক করুন। এখান থেকে  f stop বাড়ালে বড় ডেপথ অব ফিল্ড পাবেন, যার ফলে ব্যাকগ্রাউন্ড স্পষ্টভাবে দেখাবে। আর f stop নাম্বার কমিয়ে দিলে শুধু সাবজেক্ট-ই স্পষ্ট হবে এবং ব্যাকগ্রাউন্ড ঘোলাটে হয়ে যাবে। 

প্যানোরামা: প্যানোরামা ছবি তোলার জন্য ফোনটিকে পোর্ট্রেট ওরিয়েন্টেশনে ধরতে হবে। তারপর শাটার বাটন চেপে তীরচিহ্ন অনুযায়ী চারদিকে ঘোরাতে হবে।

ভিডিও: পোর্ট্রেট বা ল্যান্ডস্কেপ, যে কোনোভাবেই আপনি ভিডিও করতে পারেন। কোন প্ল্যাটফর্মের জন্য ভিডিও করছেন, তা মাথায় রেখে ফোনের ওরিয়েন্টেশন ঠিক করুন। 

স্লো-মোশন: (উপরে দেখুন)

টাইম ল্যাপস: টাইম ল্যাপস (বা দ্রুত চলা) ভিডিও তৈরির জন্য ভিডিও ধারণ করা হয় নির্দিষ্ট বিরতিতে। আপনি যখন টাইম ল্যাপস মোড বাছাই করে শাটার বাটনে ক্লিক করবেন, তখন ফোনের ক্যামেরা নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে ভিডিও গ্রহণ করবে (প্রতি ছয় সেকেন্ডের জন্য এক সেকেন্ড করে। ফলে আপনি যদি ৬০ সেকেন্ড ধরে রেকর্ড করেন, তাহলে আপনি পাবেন ১০ সেকেন্ডের ভিডিও)। ভিডিও ধারণের সময়-বিরতিতে পরিবর্তন আনতে চাইলে ব্যবহার করতে পারেন বিনাপয়সার হাইপারল্যাপস অ্যাপ। কার্যকর বিরতির সময় হতে পারে এরকম: চলমান যানবাহন ও দ্রুতগতির মেঘের জন্য ১ সেকেন্ড। সূর্যাস্ত, সূর্যোদয় বা ধীরগতির মেঘের জন্য ১-৩ সেকেন্ড।

নাইট মোড: সাম্প্রতিক আইফোনগুলোতে কম আলোতে ছবি তোলার সময় নাইট মোড চালু হয়ে যায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে। নাইট মোড বাটনে ক্লিক করে এবং স্লাইডারে গিয়ে আপনি শটের দৈর্ঘ্য ঠিক করে নিতে পারেন। অন্য যেকোনো ক্যামেরার মতো এখানেও আপনাকে শাটার স্পিড কমিয়ে দিতে হবে। এবং ক্যামেরা স্থির রাখতে হবে। 

ফোকাস ও এক্সপোজার


ছবি ও ভিডিওর ফোকাস ও এক্সপোজার উন্নত যেভাবে করবেন:

  • যে বিষয়টি হাইলাইট করতে চান, সেটিতেই ফোকাস করুন।
  • ফোকাস ঠিক রাখার জন্য ছবির বিষয়বস্তু থেকে কিছুটা দুরত্ব বজায় রাখুন। ফোকাল পয়েন্ট যেন ঘোলাটে না হয়ে যায়, সেজন্য সাবজেক্টের খুব কাছাকাছি যাওয়া পরিহার করুন।
  • শুরুতে অটো ফোকাস ব্যবহার করুন। তারপর ম্যানুয়াল সেটিংসে গিয়ে আরো ভালোভাবে ফোকাস করুন। 
  • পোর্ট্রেট নেয়ার সময় ত্বকের রং বুঝে আলোর মাত্রা ঠিক করুন।
  • হাইলাইট ও শ্যাডো বুঝে আলোর মাত্রা ঠিক করুন যাতে ডিটেইল ধরে রাখা যায়, এবং জ্বলে যাওয়া এড়ানো সম্ভব হয়। আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে পবে, কোনটা ভালো যাবে।
  • আপনার কাঁধ উপচে গিয়ে যে আলো সাবজেক্টের ওপর পড়বে তা দিয়েই ছবি তোলা ভালো। আবার সিলোয়েট বা আলোর বিপরীতে ছবি তুলতেও যেন ভয় পাবেন না।
  • অত্যন্ত অল্প আলোতে ছবি তোলার সময় ক্যামেরার নড়াচড়া যত কম হয় ততই ভালো। প্রয়োজনে ট্রাইপড ব্যবহার করুন।

জুম করার প্রবণতা বাদ দিন। কারণ সাবলীলভাবে জুম করার কাজটি বেশ কঠিন। আইফোন ১২ প্রো মডেলে ফোর এক্স অপটিক্যাল জুম ও টেন এক্স ডিজিটাল জুমের অপশন আছে। যদি আপনার জুম করতেই হয়, তাহলে অপটিক্যাল জুম ব্যবহার করুন। কারণ এতে ফোকাস বা ছবির মান খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। 

মাল্টি লেন্স স্মার্টফোন


বেশিরভাগ স্মার্টফোনে অন্তত দুইটি লেন্স থাকে। নতুন আইফোনে আছে তিনটি লেন্স: আল্ট্রাওয়াইড: ১৩-এমএম (১২০ ডিগ্রী ফাইল অব ভিউ),  f/2.4 অ্যাপার্চার; ওয়াইড: ২৬-এমএম, f/1.6 অ্যাপার্চার; টেলিফটো ৬৫-এমএম, f/2.2 অ্যাপার্চার। ওয়াইড লেন্সের আছে একটি বড় পরিসরের সেন্সর। যার অর্থ: এখানে বেশি আলোক সংবেদনশীল পিক্সেল আছে। (পিক্সেল নিয়ে আরো ব্যাখ্যা পেতে পড়ুন মোজো ওয়ার্কিংয়ের এই লেখাটি।)

শেষে বলা যায়: ক্যামেরার সেটিংসের বিভিন্ন অপশন ঘেঁটে দেখতে ভয় করবেন না। ফাংশনগুলো ভালোমতো বুঝতে সেগুলো ঘাঁটাঘাঁটি করুন। আপনার গল্পটি ভালোভাবে বলার জন্য ফ্রেমিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই, সেটিংস থেকে স্ক্রিন গ্রিডের অপশনটি চালু করে নিন। এতে আপনার বিষয়বস্তুর ওপর ফোকাস করতে সুবিধা হবে। এভাবে সেটিংসগুলো দেখতে দেখতে যখন আপনার শাটার (লেন্সের গতি), আইএসও (ক্যামেরার সেন্সরের তড়িৎ সংবেদনশীলতা), বা হোয়াইট ব্যালান্সের ওপর নিয়ন্ত্রণ চলে আসবে তখন অন্যান্য অ্যাডভান্সড টুল বা ভিডিও ক্যামেরা অ্যাপের খোঁজ করুন। 

অ্যাডভান্সড ভিডিও অ্যাপের জন্য ফিল্মিক প্রো ব্যবহার করে দেখতে পারেন। স্থির ছবি তোলার অ্যাডভান্সড অ্যাপ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন ক্যামেরা+। তাহলে, শুরু করে দিন মোবাইল সাংবাদিকতা। 


Post a Comment

Previous Post Next Post